পার্বতীপুরে সরিষার বাম্পার ফলন
ঋতুর পালাবদলে শীত মৌসুমে দিনাজপুরের পার্বতীপুরের মাঠগুলোতে এখন শোভা পাচ্ছে হলুদ রঙের সৌন্দর্যমন্ডিত
ফুল। দিগন্তবিস্তৃত মাঠ সেজেছে সরিষা ফুলের সমারোহে। চোখে পড়ার মতো সরিষা আবাদ হয়েছে পার্বতীপুর উপজেলায়।
এই উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, হলুদ ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে মাঠ। সরিষা গাছের ফুল হতে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি মধু সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে ঘরে উঠে আসবে চাষীদের প্রত্যাশিত এ ফসল।
চলতি মৌসুমে পার্বতীপুরে সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করেছেন এলাকার চাষীরা। পার্বতীপুর কৃষি কর্মকর্তা আবু ফাত্তাহ মোঃ রওশন কবির জানায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় সরিষা আবাদের জন্য ৫শত ৮৫ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় । কিন্তু এবার আবাদ হয়েছে লক্ষমাত্রার থেকেও বেশী জমিতে।
জাহানাবাদ গ্রামের কৃষক মোঃ মোকলেছুর রহমান জানান, আশা করছি এইবার সরিষা ভাল হবে ।
তবে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দিকে অভিযোগ তুলে বলেন কৃষকদের সরিষা চাষে আগ্রহ সৃষ্টির জন্য তারা কোনো সুযোগ সুবিধাই পাননি। তাদের মতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর যদি কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ যথারীতি দেখাশোনা করত তাহলে অনেক অনাবাদি জমিতে আরও বেশি সবজিসহ সরিষা চাষ করা সম্ভব হত।
একই এলাকার কৃষক মোঃ আব্দুর রহমান বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা এবং সরিষার ন্যায্যমূল্য পেলে এ অঞ্চলের কৃষকরা ধান চাষের পাশাপাশি সরিষা চাষে আরও বেশি এগিয়ে আসবে।
সরিষার শাক এখন খুবই জনপ্রিয়। তাই এ অঞ্চলের অনেক কৃষক শুধু শাক বিক্রি করতেই সরিষা চাষ করেন। সরিষার বাজার মূল্য হিসেবে অল্প সময়ের মধ্যে বেশি লাভ হচ্ছে বলে জানান কৃষকেরা।তারা বলেন, স্বল্প সময়ের মধ্যে হাতে টাকা পাওয়া যায়, তাই শাক বিক্রি করে দেই।
এদিকে পার্বতীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবু ফাত্তাহ মোঃ রওশান কবির জানান, মাত্র ৫ শতাংশ জমিতে সরিষা চাষ করলে ৩-৫ জনের পরিবারের এক বছরের তেলের চাহিদা মিটে যায়।
পার্বতীপুর উপজেলায় এবার সরিষা ফলন বেশ ভালো বলে আশা করা যাচ্ছে। এমনকি প্রতিটি উপজেলায়ই এবার ভালো সরিষা হবে। বাজারে সরিষার দাম ভালো পাওয়া গেলে কৃষকের লাভের অঙ্কটা একটু বেশিই হবে।
তিনি আরও বালেন, আলোচা সরিষার বীজ সরবরাহ করায় জমিতে বিঘায় চার মণ, কোনো কোনো জমিতে পাঁচ মণ সরিষা পাওয়া যাবে। চলতি বছরে ভাল দাম পেলে আগামীতে পার্বতীপুরের কৃষকরা সরিষা চাষে আরো বেশী আগ্রহী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/মাসুদ